নিজস্ব প্রতিবেদক ॥ জমি ‘আত্মসাত’র চেষ্টায় বৃদ্ধা মাকে ১৪ দিন ধরে গৃহবন্দি করে রাখার অভিযোগ উঠেছে ছেলের বিরুদ্ধে। বরিশালের মেহেন্দিগঞ্জ উপজেলার আন্ধারমানিক গ্রামে এ ঘটনা ঘটে। ওই বৃদ্ধার নাম খোদেজা বেগম (৯৩)। তাকে তার মেঝ ছেলে মকবুল হোসেন খান ২৯ আগস্ট থেকে গৃহবন্দি করে রেখেছেন বলে অভিযোগ বড় ছেলে আলী আহম্মেদ খান, ছোট ছেলে সেলিম খান এবং মেয়ে ছকিনা বেগমের। ১৯৯৭ সালে খোদেজা বেগমের স্বামী ইয়াছিন খান মারা যান। এরপর থেকে পৈত্রিক সম্পত্তির ভাগ নিয়ে মকবুল হোসেনের সঙ্গে অন্য ভাইবোনের মধ্যে বিরোধ চলে আসছে। মকবুল হোসেনের বড় ও ছোট ভাই এবং বোন বলেন, বাবার মৃত্যুর পর আইন অনুযায়ী সব সম্পত্তির মালিক হন মা। নিয়ম অনুযায়ী মা আমাদের মধ্যে ভাগ করে দেওয়ার কথা বলেন। কিন্তু মেঝ ভাই তাতে রাজি হয়নি। প্রায় ১২ বছর আগে স্থানীয় গণ্যমান্য ব্যক্তিদের উপস্থিতিতে সালিশ বৈঠকের মাধ্যমে ভিটে বাড়ির জমি ভাগ করে দেওয়া হয়। ওই সময় মেঝ ভাই মকবুল হোসেনের আপত্তির কারণে কৃষি জমি ভাগ করে দেওয়া সম্ভব হয়নি। এরপর থেকে বিভিন্ন সময় কৃষি জমি দখলের চেষ্টা করে আসছেন তিনি। তারা আরও জানান, ২৯ আগস্ট মা খোদেজা বেগমকে চিকিৎসা করানোর কথা বলে মেঝ ভাই বরিশালে নিয়ে যান। সেখানে নিয়ে ভয়ভীতি দেখিয়ে দুই একর ১৬ শতাংশ জমি লিখে নেওয়ার কথা শুনেছেন। এরপর থেকে মায়ের সঙ্গে তাদের দেখা করতে দেওয়া হচ্ছে না বলে অভিযোগ করেন দুই ভাই ও বোন। তারা বলেন, আমাদের মা বার্ধক্যজনিত নানা রোগে ভুগছেন। ঠিকমতো চলাফেরা করতে পারেন না। তার চিকিৎসার প্রয়োজন। কিন্ত তার সঙ্গে দেখা করা দূরের কথা, কোনোভাবেই যোগাযোগ করতে দেওয়া হচ্ছে না। মা জীবিত আছেন কি-না তা নিয়ে সন্দেহ হচ্ছে। এ অবস্থায় শুক্রবার বিকেলে স্থানীয় গণ্যমান্য ব্যক্তিদের নিয়ে আমরা মায়ের সঙ্গে দেখা করার চেষ্টা করি। কিন্তু আমাদের সেখান থেকে তাড়িয়ে দেওয়া হয়। স্থানীয় ইউনিয়ন পরিষদ সদস্য (ইউপি) জামাল খান জানান, কয়েকজন ব্যক্তিকে নিয়ে খোদেজা বেগমের খোঁজ নিতে মকবুল হোসেনে বাড়ি গিয়েছিলাম। এসময় খোদেজা বেগমের দুই ছেলে ও এক মেয়ে সঙ্গে ছিলেন। বাড়ির প্রধান দরজার বাইরে থেকে তালা ছিল। তবে ভেতরে লোকজনের শব্দ পাচ্ছিলাম। অনেক সময় ধরে ডাকাডাকি করি। কিন্তু কেউ দরজা খুলেনি। দীর্ঘ সময় অপেক্ষার পর আমরা চলে আসি। অভিযোগ প্রসঙ্গে জানতে মকবুল হোসেনের মুঠোফোনে যোগাযোগ করা হলে তা বন্ধ পাওয়া যায়। মেহেন্দিগঞ্জের কজীরহাট থানার পরিদর্শক (তদন্ত) আব্দুর রহমান জানান, বিষয়টি তার জানা নেই। তিনি পুলিশ পাঠিয়ে খোঁজ নেবেন।
Leave a Reply